এখন অনেক রাত। ঘড়িতে ঠিক ১১:৪২ বাজে। মাদরাসার নিয়মশৃঙ্খলার জিঞ্জিরে আবদ্ধ থাকা অবস্থায় এটা অনেক রাতই বটে। আর এত রাতে ডায়েরি নিয়ে বসার মতো ছেলে আমি না। তবুও অজানা কোনো শক্তি আমাকে বাধ্য করলো এ কাজটি করতে—যেন এটা করা আমার উচিত।
কিছুক্ষণ আগে একটা বই শেষ করলাম। বইয়ের নাম‘সেদিনও বসন্ত ছিল’। উপন্যাসের বই। লিখেছেন আমার প্রিয় লেখকদের একজন—‘রশীদ জামীল’। যার লেখা পড়ে আমি প্রীত হই সর্বদাই।
বইয়ের মূল চরিত্রে বসে আছে ‘কম্পাস’ নামের এক নিঃস্ব যুবক। প্রকৃতি যাকে বারবার ঠকিয়েছে। তাকে একেবারে খাদের কিনারায় নিয়ে ছুঁড়ে ফেলেছে। সে ছোটবেলায় নিজের আপন মা-কে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। সেই থেকে শুরু। বাবাকে সে আর কখনো আপন করে নিতে পারেনি। তার ধারণা—মায়ের মৃত্যুর জন্য তার বাবাই দায়ী। এজন্য সব রাগ তার গিয়ে জমা হয় বাবার প্রতি। সে নিজেকে বাবার থেকে আলাদা করে ফেলে। এমনকি বাবার কাড়ি কাড়ি সম্পদ থেকেও সে ফিরিয়ে নেয় নিজেকে।
হঠাৎ তার জীবনে আবির্ভাব ঘটে এক মেয়ের—নাম মুসকান। মূলত মুসকানের জীবনেই প্রথম আবির্ভাব ঘটে তার। কোনো এক অনুষ্ঠানে সে (মুসকান) তাকে দেখে ফিদা হয়ে যায়। এবং নিজেকে তার কাছে সঁপে দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করে।
এরপর কি হয়? এরপর হয় অনেককিছুই। প্রকৃতি তার চাল খানিকটা বদলে দেয়। মেয়েটিকে সে রূপ দেয় ছলনাময়ীর। ছেলেটিকে দেয় ত্যাগীর সর্বোচ্চ সম্মাননা। কিন্তু…?
শেষ দিকে এসে আমি বেশ উত্তেজনা অনুভব করেছিলাম। প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার মনে হচ্ছিল ‘উত্তেজনাবর্ধক’ একেকটা এন্টিবায়োটিক। উত্তেজনায় আমি কাঁপছিলাম পর্যন্ত। কিন্তু শেষে এসে…!
লেখক মশাই! আপনি এতটা
নিষ্ঠুর না হলেও পারতেন।
আমাদের মতো পাঠকদের নিয়ে
এভাবে না খেললেও পারতেন।
***
বই : সেদিনও বসন্ত ছিলো
লেখক : রশীদ জামীল
প্রকাশনী : কালান্তর