Abu Bakar Siddique

নীল যমুনার জল

বুক-রিভিউ

আমার সবচে’ পছন্দের বিষয় হলো ইতিহাস। তবে আজকাল তার সাথে সমানতালে যুক্ত হয়েছে ভ্রমণকাহিনি। ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে বিধায় এ বিষয়ে টুকটাক বইপত্র পড়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু তাই বলে এতো আসক্ত হয়ে পড়বো এই বিষয়ে—তা কল্পনাও করিনি।

বুলবুল সরওয়ারের লেখা ‘নীল যমুনার জল’ বইটা পড়লাম। ২০৮ পৃষ্ঠার এই বইয়ে লেখক তুলে ধরেছেন তার মিশর ভ্রমণের কিছু কাহিনি। ২০০১ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য মিশর গিয়েছিলেন। তখনকারই নানা অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন এতে। পাশাপাশি তুলে ধরেছেন প্রাচীন মিশরের খানিকটা ইতিহাসও। সম্রাট আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট, রাণী ক্লিওপেট্রাসহ আরো অনেকের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। সবমিলিয়ে বইটা অসাধারণ ছিলো—এটা মানতেই হবে। পড়ার সময় মোটেও ‘কেমন কেমন’ অনুভূত হয়নি।

এই বইয়ে লেখক তার ভ্রমণকাহিনি বর্ণনা করেছেন খুবই সাবলীল কিন্তু চমৎকারভাবে। পড়ার সময় মনে হচ্ছিল—যেন সামনাসামনিই দেখছি কায়রো শহর, গিজার পিরামিড, সিনাই উপত্যকা। এটা পাঠককে একদিকে যেমন পরিতৃপ্ত করে, ঠিক তেমনি তৃষ্ণার্তও  করে তোলে। বইটা পড়ে আমার মিশর ভ্রমণের তৃষ্ণা প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে। এগুলোই বোধকরি লেখকের সার্থকতা। জাত লেখক যারা, তারা পাঠককে বইয়ের ভেতর আটকে রাখতে পারেন। 

কিছু কিছু বই আছে যেগুলো পাঠকের পাঠতৃষ্ণা আরো বাড়িয়ে তোলে। এই বইটাও সেগুলোর একটা। আগে আমি মিশর সম্পর্কে খুব একটা আগ্রহী ছিলাম না। কিম্বা কখনোই আমি আল আজহার পড়তে যেতে চাইনি। আমার সহপাঠী কিংবা পরিচিতদের যখন দেখেছি ঘরে যাওয়ার জন্য জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন তাদের বলেছি, ‘মিশরে গিয়ে কি করবা? পড়তে গেলে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাও। আজহারের চেয়ে তো ওখানে সুযোগ-সুবিধা ঢের বেশি।’

কিন্তু সবাই সব কথার উপর অটল থাকতে পারে না। আমিও পারিনি। এই বইটা পড়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। ইচ্ছে বদলেছে। এখন আমার ইচ্ছে, যদি সম্ভব হয় তবে আল আজহারে এডমিশন নেবো। নাহলে অন্তত একবার হলেও গিয়ে ঘুরে আসবো রহস্যের দেশ মিশরে। ইনশাআল্লাহ।

***

বই : নীল যমুনার জল

লেখক : বুলবুল সরোয়ার 

প্রকাশনী : ঐতিহ্য

লিখেছেন : 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার সম্পর্কে

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit.

গ্যালারি

আমাকে অনুসরণ করুন